No announcement available or all announcement expired.
sandipta_chatterjee

Medianest: Remembering Sandipta Chatterjee

 

​A joint endeavour of Sandipta's friends and
School of Media, Communication and Culture, Jadavpur University




ju
 

সিরিয়া, শ্রীদেবী, ফেসবুক ও বাথটব

 
Prasenjit Sinha (March 4, 2018)
 
FacebookTwitterGoogle+PinterestLinkedInWhatsAppShare

 

বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে এধরনের সম্প্রচার নিয়েই বিতর্ক

বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে এধরনের সম্প্রচার নিয়েই বিতর্ক

প্রসেনজিৎ সিংহ

যে বাথটবে শ্রীদেবীর মৃত্যু হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে, সেটা আমরা কেউ দেখিনি।

কথাটা শুনতে ততটা ভাল লাগছে না ঠিকই, তবে সত্যি এটাই। বাথটবে ডুবে যাওয়া আদৌ সম্ভব কি না (অচৈতন্য অবস্থাতেও) তা নিয়েও ধন্দ কাটেনি ভারতবাসীর। যেখানে শ্রীদেবী অচৈতন্য হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন বলে কথিত, সেই বাথটব সর্বদা জলে পূর্ণ থাকত কি না, সেটার গভীরতা কত, কীভাবে সেখানে পড়েছিলেন, এইসব প্রশ্নের উত্তর কিন্তু সামনে আসেনি। যে তত্ত্ব প্রচার করা হচ্ছে সেই অল্প সময়ে দেহ এতটা ফুলতে পারে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কোনও কোনও মহল।

অনেকে এর সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন ২০১২ সালে বাথটবে মৃত্যু হওয়া গায়িকা-নায়িকা হুইটনি হিউস্টনের সঙ্গে। দুদিন পরে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তাঁর দেহে অতিরিক্তমাত্রায় ড্রাগের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল। শ্রীদেবীর ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, শরীরে অ্যালকোহলের উপস্থিতির কথা। তাঁর পরিচিতেরা বলছেন অন্য কথা। হার্ড ড্রিংকস থেকে দূরেই থাকতেন শ্রী।

বহু প্রশ্নেরই জন্ম হয়েছে ভারতের প্রথম মহিলা সুপারস্টারের মৃত্যু ঘিরে। তাঁর শেষকৃত্যের সঙ্গে প্রশ্নগুলি কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি। সবচেয়ে বড়, ময়না তদন্তের সঠিক রিপোর্ট জনসমক্ষে এসেছে তো? প্রথমে প্রচারিত ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’-এর তত্ত্বকে সরিয়ে রাখা হল কেন? আরও একটি সন্দেহ অনেকের মনে, মৃত্যুর কারণ হিসাবে ‘অ্যাকসিডেন্টাল ড্রাউনিং’ কতটা গ্রহণযোগ্য পোস্টমর্টেম রিপোর্টে? পোস্টমর্টেম কি বলতে পারে নিশ্চিত করে, এই ঘটনা দুর্ঘটনাজনিত?

 বনি কাপুরের ভারতে এসে ফিরে যাওয়া, তিনদিন পর সেটাও তো রহস্যজনক লাগছে অনেকের কাছে। ওই তিনদিন কি হোটেলের রুমেই ছিলেন অভিনেত্রী? রুম সার্ভিস, হাউসকিপিং, এরা কী বলছে? না কি ওই তিনদিন ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ ট্যাগ ঝোলানো ছিল তাঁর দরজায়?  এসব তথ্য কিন্তু এখনও সামনে আসেনি। আদৌ আসবে কি না, তা-ও বলা মুশকিল। বনি  কাপুর ১৫ মিনিট তাঁর সঙ্গে কথা বললেন, কিছু অস্বাভাবিকতা দেখেছিলেন কি না, বা এর মধ্যে কী এমন ঘটল যে বাথরুমে গিয়েই অচৈতন্য হয়ে পড়লেন। সবকিছু ভাল ভাবে যাচাই হওয়া দরকার।

এত কথা বলা পরিপ্রেক্ষিত বিচারের জন্যই। মোদ্দা যেটা বলতে চাই, ধোঁয়াশা রয়েছেই। এই ধোঁয়াশার মধ্যে প্রকৃত ঘটনা বা তার সম্ভাব্যতা নিয়ে খবরের কাগজ, টেলিভিশন, ওয়েবে যখন কাটা ছেঁড়া চলছে, তখন একদল মানুষ সক্রিয় হয়ে উঠলেন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাঁদের বক্তব্য, শ্রীদেবীর মৃত্যু ছাড়া কি আর কোনও খবর নেই? 

জনৈক সক্রিয় ‘ফেসবুকি’ তো মন্তব্য করে বসলেন, শ্রীদেবীর মৃত্যু বেচে প্রচুর কামিয়ে নিল কাগজগুলো। হয়তো নিল। যাঁরা খেয়াল করেছেন, তারা দেখবেন ইউটিউবেও এই তারকার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বেশকিছু চ্যানেল মাঠে নেমে পড়েছে। একেকটার ভিউ ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। রাতারাতি এই অর্জন, শ্রীদেবীর জনপ্রিয়তা ছাড়া সম্ভব হতো না। কাজেই বিষয়টা ওভাবে দেখার দরকার কী?

মানুষের মধ্যে জানার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। তথ্যের তৃষ্ণা রয়েছে। সেই তৃষ্ণা নিবারণের উপকরণ থাকলে তার কদর বাড়বে। হয়তো তার একটা বাণিজ্যিক দিকও রয়েছে। বাণিজ্য, মুনাফা এসবের গন্ধ আছে বলেই সেই প্রচেষ্টা নিন্দার্হ হয়ে যাবে, এমনটা মনে হয় না।

বরং এই পর্বে মিডিয়ার ভূমিকা যথাযথ বলেই মনে হয়েছে। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের তত্ত্ব খারিজ করে দুর্ঘটনাজনিত জলে ডোবা’র (তায় আবার বাথটবে) তত্ত্ব চালু হতেই গণমাধ্যম সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করে। সেটা কেন যে কারও কারও জলঘোলা করা মনে হল জানি না।

সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ কেউ আছেন আরেক কাঠি সরেস। তারা সবসময় নতুন কিছু বলার পক্ষপাতী। তাই এই মৃত্যুর সঙ্গে সম্ভাব্য রহস্যময়তা তাঁদের সেভাবে টানেনি। কারণ ওটা নিয়ে সকলেই আলোচনা করছেন। তাঁরা সেটাকে পাশ কাটিয়ে ধরেছেন শ্রীদেবীর মৃত্যু পরবর্তী রাষ্ট্রীয় সন্মাননার বিষয়টিকে।

জনৈক নেটিজেনের বক্তব্য, এক মাতাল জলে ডুবে মরল। জাতীয় পতাকায় তাকে মুড়ে দেওয়া হল। বন্দুক জানাল স্যালুট। তার আরেক দোসর হয়তো লিখলেন, এ রাজ্যে হলে দু’লাখ টাকা পেতেন নিকটাত্মীয়েরা। তাঁদের সাবধান করে কেউ লিখলেন, শিল্পী মদ খেয়ে যৌনপল্লিতে মরলেও তিনি শিল্পীই।

এ পর্যন্ত ঠিকই ছিল। সঙ্গে প্রথমজনকে উদ্দেশ্য করে তিনি জুড়লেন, আপনি যখন কত্তাব্যক্তি ছিলেন তখন দাম্ভিক ছিলেন। এখন সেনাইল।

 প্রথমজন বেকায়দায় পড়ে গলিপথ ধরলেন। ঘুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন। বললেন তিনি বিশ্বাস করেন না ওইভাবে মৃত্যু হয়েছে। যদি দুবাইয়ের ডেথ সার্টিফিকেটকে সত্যি বলে ধরে নেওয়া হয় তবেই এমনটা হয়। তবে ব্যক্তিগত আক্রমণের অংশটিকে তিনিও ছাড়লেন না। বললেন, কয়েকমাস আগে আমি যখন আপনার কবিতার প্রশংসা করেছিলাম, কই তখন তো আমাকে সেনাইল মনে হয়নি। তখন তো বোদ্ধা মনে হয়েছিল…… অতএব আলোচনা নেমে এল ব্যক্তিগত স্তরে।

এ নেহাতই সামান্য নমুনা। যাকে বলা যায় ‘ফেসবুকে যেমন হয়’। প্রসঙ্গক্রমে বলতেই হয়, এঁরা দুজনেই বুদ্ধিজীবী হিসাবে পরিচিত। স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তাঁরা যে নমুনা রাখলেন তা কতটা গ্রহণযোগ্য। সত্যিই কি এঁদের তর্ক-বিতর্ক কোনও সম্মানজনক অবস্থানে তাঁদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারল?

সবচেয়ে বড় কথা শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে যে রহস্যের জট মানুষের মনে পাকিয়ে রয়েছে তার সমাধান করতে পারল? আলোচনা হোক। তবে তা সংযত এবং যুক্তিনির্ভর হবে না কেন?

সোশ্যাল মিডিয়ার সে ক্ষমতা হয়তো নেই যে রহস্যের সমাধান করতে পারবে। তবে এই পরিসরে যারা সিরিয়ার সঙ্গে শ্রীদেবীর তুলনায় নেমে পড়েছেন, তাদেরও বুঝতে হবে হঠাৎ করে সিরিয়ার শিশুমৃত্যুকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে আনা হচ্ছে সুকৌশলে। নইলে সিরিয়া আজ নতুন করে অশান্ত হয়নি। প্রতিদিন মৃত্যু-মৃত্যু-মৃত্যু আসলে মৃত্যুকেও একঘেয়ে করে দেয়। সংবেদী ছবি এবং প্রয়োজন মতো ভাষ্য সহযোগে তা নতুন করে ‘খাইয়ে’ দিলে দেখা গিয়েছে কাজ হয়। হচ্ছে তেমনই।

যে যুগে ইন্টারনেট ছিল না, তখন বলা হতো পশ্চিমি প্রেক্ষিতে লেখা খবর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভার্টিকাল ফ্লো অফ ইনফরমেশন। জনগণকে যা দেওয়া হচ্ছে তাই তারা ‘খাচ্ছে’। পরিবর্তিত বিশ্বে সেই আলোচনা আজ পুরোপুরি ব্রাত্য হয়ে গিয়েছে, এমন মনে করার কোনও কারণ দেখি না।

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>

*

 


 
  • Recent Posts

     
  • Follow us

    FacebookTwitterGoogle+RSS Feed
     
  • Share

     
  • Facebook

     
  • Archives

     
  • March 2024
    M T W T F S S
     1234
    567891011
    12131415161718
    19202122232425
    26272829  
     
  • Recent Comments

     
  • Tags

     
  •  

    top