No announcement available or all announcement expired.
sandipta_chatterjee

Medianest: Remembering Sandipta Chatterjee

 

​A joint endeavour of Sandipta's friends and
School of Media, Communication and Culture, Jadavpur University




ju
 

ধীরে ধীরে বও ওগো উতল হাওয়া

 
Prasenjit Sinha (April 9, 2017)
 
FacebookTwitterGoogle+PinterestLinkedInWhatsAppShare

প্রসেনজিৎ সিংহ

 সোশ্যাল মিডিয়ায় যা ইচ্ছে তাই?

সোশ্যাল মিডিয়ায় যা ইচ্ছে তাই?

 

এক কবির কবিতা নিয়ে ক’দিন উত্তাল হল বাংলা।

তাঁর কবিতায় ধর্মীয় ভাবাবেগ আহত হল কি না, হলে কতটা? যদি হয়েই থাকে, তবে সমপরিমাণ ধাক্কা বিপক্ষের প্রাপ্য কি না, এবং কোন কোন বিষয়ে কবির লেখা উচিত ছিল কিন্তু তিনি লেখেননি, তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হল ক’দিন।

আর এই প্রসঙ্গেই এসে পড়ল বাক্‌- স্বাধীনতার প্রশ্নটি। কবি কী লিখবেন, তা কবিই ঠিক করবেন। হক কথা। সেটা শুধু নাগরিক হিসাবে তাঁর বাক্ স্বাধীনতাই নয়। শিল্পীর স্বাধীনতাও বটে। যদি কোনও এক সম্প্রদায়ের দিকে (অনেকে যেমন অভিযোগ করছেন) তাঁর রোষকষায়িত কলম বারবার ধেয়ে যায়, তাহলে সত্যি খুব কিছু বলার থাকে কি? সেটা তাঁর ব্যাপার। আবার এ-ও সত্য, তাঁর এ হেন আচরণকে কটাক্ষ করে ছাপার অযোগ্য ভাষায় (সেইজন্যই কোথাও ছাপা হয়নি, ফেসবুকেই শুধু) গালিগালাজ করেছেন যাঁরা, এবং দাবি করেছেন ওটা যদি শিল্পী লিখে থাকতে পারেন, তাহলে তাঁদেরও বাক-স্বাধীনতা রয়েছে তাঁকে কুরুচিকর ভাষায় গালিগালাজ করার।

ভালমন্দটা জানেন তাঁরা। হ্যাঁ, দু’পক্ষই।

এক্ষেত্রে কবি ‘সুযোগসন্ধানী বুদ্ধিমান’,বা কতটা ‘সিলেক্টিভলি সেকুলার’ কি না সে বিতর্কে যেমন যাব না, তেমনই যাঁরা অশ্রাব্য ভাষায় তাঁকে গালিগালাজ করলেন, তাঁদের রুচি নিয়েও কোনও মন্তব্য করছি না। এমনকী, কে ঠিক—কে নয়, সেই বিচারে যাব না। কী হওয়া উচিত, তা-ও বলতে চাই না। একটু দূর থেকে যেটুকু বুঝলাম, বলতে চাই সেই অনুভূতির কথা। সাংবাদিকতার ছাত্র হিসাবে দু’একটি পর্যবেক্ষণ শুধু ভাগ করে নিতে চাই।

কবিতা লিখলেন কবি। কীসের ভিত্তিতে? একটি ভিডিও ক্লিপের। পরে একজন জানালেন, ওই ক্লিপটি নাকি ফ্যাব্রিকেটেড। শেষাংশে বক্তার লিপ সিঙ্ক করেনি। ফেসবুকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই বক্তব্য তেমন গুরুত্ব পায়নি দেখলাম। আমার কাছে এটা অত্যন্ত জরুরি মনে হয়েছে। যদি ভিডিওটাই নকল হয়, তবে এই কাব্যিক প্রতিক্রিয়াও হাস্যকর। ততোধিক হাস্যকর কবিকে আক্রমণ করে যারা চিড়বিড়িয়ে উঠলেন তাঁদের মনোভাব।

এখন প্রশ্ন হল ওই ভিডিওটি কতজন দেখেছেন? সেটি আসল না নকল, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সেসম্পর্কে কোনও রায় দিয়েছেন কি না, সে সম্পর্কেই বা আমরা এত উদাসীন কেন? না কি সকলে চায় তর্ক জমলেই হল— তার সারবত্তা থাকুক বা না থাকুক!

বিতর্কিত কবিতাটি ফেসবুক নাকি প্রথমে তুলে নিয়েছিল। পরে না কি আবার তা ফেরত দেয় কবিকে। কীসের ভিত্তিতে তুলে নেওয়া হল আর কীসের ভিত্তিতেই বা সেটিকে ফেরত দেওয়া হল, তার স্বচ্ছ ধারণা কি এই বিতর্কের পরে মানুষের হয়েছে? অর্থাৎ ফেসবুকে কী লেখা যায় আর কী লেখা যায় না?

আরও একবার হয়তো প্রমাণ হল, সোশ্যাল মিডিয়া এমন অনেককিছুই রাতারাতি করতে পারে যা খবরের কাগজ বা টেলিভিশন পারে না। কথাটা ভুল নয়। অনেকেই তুলেছেন তেহট্ট, ধূলাগড়, দেগঙ্গার কথা। একথা ঠিক যে পশ্চিমবঙ্গের মিডিয়া এখনও পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক বিভিন্ন ঘটনায় যথেষ্ট দায়িত্বোধের পরিচয় দিয়ে এসেছে। যদিও একশোভাগ এখন আর বলা যাচ্ছে না। কারণ, কিছু কাগজ এগুলোকে ফলাও করে যে তুলে ধরেনি এমন নয়। তাদের প্রচার বেশি না হওয়ায় প্রভাব হয়তো ততটা পড়েনি।

 দায়িত্বশীল ওইসমস্ত কাগজের কর্তাব্যক্তিরা এদেশের ভূমিবাস্তবতার সঙ্গে পরিচিত। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্বে যারা রয়েছেন তাঁরাও কি এখানকার সমাজবাস্তবতার সঙ্গে ততটাই পরিচিত? বা তাঁদের ভাবনাচিন্তা এখানকার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ? সাংবাদিকতার নৈতিকতা দূরস্থান, স্বাভাবিক বিচারও কখনও সখনও হেলায় লঙ্ঘিত হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর প্রভাব সমাজকে কোনদিকে ঘুরিয়ে দিচ্ছে তা আমরা দেখতে পাচ্ছি।

অনেকে বলেন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের প্রাথমিক যোগ্যতা থাকা দরকার। শিক্ষা-শালীনতার সেই মাপকাঠি তো নেই। এখন অনেকের কাছে এই প্ল্যাটফর্মটা হয়ে গিয়েছে এক ধরণের বিপণনের মঞ্চ। স্বাভাবিক কারণেই তার ভালমন্দ দুই-ই আছে।

অন্যভাবে বলতে গেলে দেড়-দু’দশকের সোশ্যাল মিডিয়া এখনও পৃথিবীর কাছে খুব পুরনো হয়নি। যদিও দেখেশুনে মনে হয়, বাঙালির কাছে এখন এর স্বর্ণযুগ চলছে। কতমানুষ হারিয়ে যাওয়া বন্ধু পেলেন। কত মানুষ ব্যবসার নতুন প্রচারের মাধ্যম পেলেন। কত মানুষ পেলেন তাঁদের সুপ্ত প্রতিভার স্ফূরণের একটা জানলা। আবার মনের কথা লুকিয়ে রাখতে না পেরে অনেকে এমনভাবে সেই দরজা হাট করলেন যে সেদিকে তাকাতেও লজ্জা করে। সমস্ত কদর্যতা হাটের মাঝে প্রকাশিত হল। তিনি হালকা হলেন। কিন্তু পরিবেশ বিষিয়ে গেল। ভাল না মন্দ সেটা তো ব্যবহারকারীদেরই ঠিক করতে হবে। নইলে অঝোর ধারায় গালিগালাজের এমন জ্বালামুখ আরও অনেক বিতর্কেই খুলে যেতে পারে।

অতএব হে সুধী, ধীরে! ‘আমার যে সব দিতেই হবে’ বলে সোশ্যাল মিডিয়ার ঘাড়ে চেপে বসবেন না! (বাক্‌ স্বাধীনতা আছে। অতএব, এটুকু বলতেই পারি)

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>

*

 


 
  • Recent Posts

     
  • Follow us

    FacebookTwitterGoogle+RSS Feed
     
  • Share

     
  • Facebook

     
  • Archives

     
  • May 2024
    M T W T F S S
     123456
    78910111213
    14151617181920
    21222324252627
    282930  
     
  • Recent Comments

     
  • Tags

     
  •  

    top