No announcement available or all announcement expired.
sandipta_chatterjee

Medianest: Remembering Sandipta Chatterjee

 

​A joint endeavour of Sandipta's friends and
School of Media, Communication and Culture, Jadavpur University




ju
 

যা নিয়ে এখানে বিক্ষোভ হয়

 
Prasenjit Sinha (October 8, 2017)
 
FacebookTwitterGoogle+PinterestLinkedInWhatsAppShare

 party2

 

প্রসেনজিৎ সিংহ

 

এখানে আসা ইস্তক দেখছি, প্রতি শুক্রবার বিকেল থেকে ইউনিভার্সিটি সিটির চেহারা বদলাতে শুরু করে। ছেলেপুলেদের প্রাণে ফুর্তি জাগে। উইকএন্ডের আগমনে বড় রাস্তার ধারে ধারে যে বাড়িগুলো রয়েছে, তার বারান্দায় বাড়তি চেয়ারটেবল, অল্পবয়সি ছাত্রছাত্রীদের কলকাকলিতে জমজমাট। রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়ে বন্ধুবান্ধব মিলে পার্টির সরঞ্জাম হার্ড ড্রিংকস, সফট ড্রিংকের বোতল, থার্মোকলের প্লেট-গ্লাস সংগ্রহ করে ফিরছে। দেশে সন্ধেবেলায় উঠতি ছেলেছোকরাদের যেমন পানদোকানের সামনে সোডা, ডালমুট কিনতে দেখা যায়, তার সঙ্গে এই দৃশ্যের খুব একটা ফারাক নেই। স্বল্পবসনা মেয়ের দল হাসতে হাসতে পাশ দিয়ে চলে যায়। যেতে যেতেই তাদের কারও কারও হাতের মোবাইলে সেলফি মোডে দেখে নেয়, সান্ধ্যসাজ কেমন হয়েছে। সারা সপ্তাহ পড়াশোনার প্রবল চাপে কাটানোর পর শুক্রবার বিকেল থেকে রিল্যাক্স করার ঝোঁক বেড়ে যায় তাদের।

যে কোনও দেশেই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এই প্রবণতা রয়েছে। শুনেছি, আমেরিকার ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মাদক সেবনের প্রবণতাও কম নয়। যদিও তার প্রমাণ এখনও স্বচক্ষে দেখা হয়নি। ইউনিভার্সিটি সিটি লাগোয়া অঞ্চলে বাস করার দরুন যা দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে উল্টোটাই। এমনিতে সোম থেকে শুক্র সারাদিনই রাস্তায় কিছু ছেলেমেয়েকে দৌড়তে দেখা যায়। হাতে দৌড় পরিমাপক তথা ক্যালরিদহনের হিসেবনিকেশ করা যন্ত্র দেখে মনে হয়, তাদের প্রতিটি মুহূর্তই ভীষণ দামি। অনেকেই সঙ্গে জল কিংবা স্বাস্থ্যকর কোনও পানীয় একহাতে ধরে হাঁটেন। এমনকী, সেমিনারগুলোতেও দেখেছি, ঢাকাদেওয়া পানীয়ের গ্লাস আর ছোট্ট ল্যাপটপ তাদের সঙ্গী। সেমিনার শুরুর আগে কিছুটা সময় পেলে সেই সময়েও কেউ বড় একটা কথা বলে না। নিজের ল্যাপটপে কিছু দেখতে বা পড়তে থাকে। দেখে ভীষণ সিরিয়াস মনে হয়।

এখানকার কোর্সগুলো বেশ ব্যয়বহুল। সকলেই যে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে আসেন তা নয়। অনেককে বিভিন্ন দোকানে লাইব্রেরিতে কাজ করতে দেখি। সন্দেহ নেই, বাড়তি অর্থের সংস্থান করতেই সামান্য অবসরটুকু কাজে লাগায় তারা। তবে ধনী বাবামায়ের সন্তান যারা, তাদের তো অভাব নেই। তারা দামী ব্র্যান্ডের সানগ্লাস পরে। নামী কোম্পানির ব্যাগ, জুতো ব্যবহার করে। পড়াশোনার সঙ্গেই জীবনটাকেও উপভোগ করে নেয় চুটিয়ে। তারই একটা অঙ্গ হপ্তান্তিক পার্টি।

পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবার নির্দেশ জারি করে ছাত্রছাত্রীদের হুল্লোড়পার্টিতে রাশ টানতে চাইছেন। তবে শুধু ছাত্রছাত্রীদের সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েই ক্ষান্ত দেননি কর্তৃপক্ষ। বেশকিছু নতুন নিয়মও চালু করতে চলেছেন। যেমন অনলাইনে প্রতিটি পার্টির (মদ ছাড়া বা মদ-সহ) অন্তত ১০ দিন আগে জানাতে হবে। পার্টিতে বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত বারটেন্ডার নিতে হবে। সঙ্গে নিতে হবে দু’জন নিরাপত্তারক্ষী। এই তিনজনকেই ঘণ্টাভিত্তিক হারে দক্ষিণাও দিতে হবে পার্টির হোস্টকে। বার টেন্ডারকে ২৫ ডলার প্রতি ঘণ্টা এবং নিরাপত্তারক্ষীর সাড়ে বত্রিশ ডলার প্রতি ঘণ্টা। দু’রকমের বেশি মদ রাখা যাবে না বার’এ। চারটের বেশি ড্রিংক নিতে পারবেন না অতিথিরা। বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত বিভিন্ন মিশ্রণ চলবে। কিন্তু শট বা ককটেল চলবে না। যদি অভ্যাগতের সংখ্যা দেড়শোর বেশি হলে হার্ড ড্রিংক সার্ভ করা যাবে না।

  স্পষ্টতই ছাত্রছাত্রীদের বেসামাল হওয়া থেকে দূরে রাখতেই এই ব্যবস্থা। শুধু মাতলামো নয়, মত্ত অবস্থায় যৌন নিগ্রহ রোখাও এর উদ্দেশ্য। 

এই নিয়েই সরগরম বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদ জানিয়েছে এই নিয়মকানুনের বিরুদ্ধে। তাদের মনে হচ্ছে এত কড়াকড়ি হলে পার্টির মানে কী! তাছাড়া খরচও অনেকটাই বেড়ে যাবে যদি, বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত  পানীয় পরিবেশক এবং নিরাপত্তারক্ষী নিতে হয়। সোজা কথায়, পাঁচ ঘণ্টার পার্টিতে সাড়ে ৪০০ ডলার ওদের পিছনে খরচ হলে আমরা খাব কী! যাই হোক, এ নিয়ে প্রতিবাদ আবেদন-নিবেদন চলছে। স্থানীয় খবরের কাগজগুলো এ নিয়ে বেশ লেখালিখি করছে। কিন্তু এখনও বরফ গলেনি বলেই খবর।

কর্তৃপক্ষের টনক নড়েছে সাম্প্রতিক একটি ঘটনায়। কিছুদিন আগে একটি পার্টিতে মত্ত অবস্থায় দুই ছাত্র আরেক ছাত্রকে প্রবল মারধর করে। বিরোধের কেন্দ্রে ছিল তাদের আরেক বান্ধবী। তিনিও মত্ত অবস্থাতেই ছিলেন। রক্তারক্তি কাণ্ডের পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ছেলেটিকে। শুধু এমন ঘটনাই নয়, পার্টিতে চিৎকারচেঁচামেচি হলেও প্রতিবেশীদের অসুবিধা হয়। কখনও সখনও তারাও নালিশ জানান। ইউপেন পুলিশ গত অগস্ট থেকে মাসদুয়েকের মধ্যে এমন খানপঞ্চাশেক পার্টি বন্ধ করে দিয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জমেছে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে।

তবে সবকিছু দেখে যখন দেশের সঙ্গে মেলাতে যাই মনে হয়, ‘ইহা অতি সামান্যই’। কিন্তু পাশাপাশি এ-ও মনে হয়, এই রাশটুকু আছে বলেই বিশ্বের প্রথম দশটা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে এই আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয়। শক্ত হাতে মোকাবিলা করার জন্য নিয়মতান্ত্রিক কাঠামোটাও জরুরি। তা আছে বলেই ছাত্রছাত্রীরা পুরোপুরি বেচাল হতে পারছেন না।

আমাদের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়ন্ত্রণ কেন নেই, তার হয়তো অনেক কারণ আছে। এর ফলও ভুগতে হয় ছাত্রছাত্রীদের। রাজনীতির অনাবশ্যক হারে দখলদারি সবকিছুকে এমন খেলো করে দেয়, কিছুই পাওয়ার থাকে না তখন।

নিয়ন্ত্রণবিহীন নৈরাজ্যে যে স্বাধীনতার আস্বাদ থাকে, কখন যে তা সভ্যতা, শালীনতার গণ্ডি অবলীলায় পার হয়ে স্বাধীনতাকেই খাটো করে সেটা টের পাওয়া যায় না। কাজেই কোথায় থামা উচিত, তা নিয়ে ভাবতেই হবে।

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>

*

 


 
  • Recent Posts

     
  • Follow us

    FacebookTwitterGoogle+RSS Feed
     
  • Share

     
  • Facebook

     
  • Archives

     
  • December 2024
    M T W T F S S
     12
    3456789
    10111213141516
    17181920212223
    24252627282930
     
  • Recent Comments

     
  • Tags

     
  •  

    top